নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার

Last Updated On:

নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার

নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার আমাদের সবারই প্রত্যাশা। কিন্তু আমরা প্রাইশই নিজেদের ভুলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় নিরাপদ থাকতে পারি না। নিষিদ্ধ বিভিন্ন সাইটে ঢুকে পড়ি। যা আমাদের বিপদের কারণ হয়ে দাড়ায়।

আরো পড়ুন- ক্লাউড কম্পিউটিং কি?

নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার

আপনি জানলে হয়তো অবাক হবেন বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা সরকারি হিসাবে সাত কোটিরও বেশি। ইন্টারনেটের সুবিধা আমাদের জীবন ধারাকে সহজ করেছে ঠিকই, কিন্তু এর কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার বা ইন্টারনেট ব্যবহারে ঝুঁকির বিষয়গুলো সম্পর্কে না জানার কারণে অনেকেই আজকাল নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। সত্যি বলতে আজকের দিনে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সবচেয়ে মূল্যবান। গুঞ্জন রয়েছে আমেরিকার পার্লামেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পিছনে ব্যাক্তিগত তথ্য চুরির এক অবিশ্বাষ্য অবদান রয়েছে। তাহলে আপনি ভেবেই দেখুন আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য কতো টা মূল্যবান!

নিরাপদ ইন্টানেট

নিরাপদ ইন্টানেট ব্যবহার

সেই ভিত্তিতেই প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সফটওয়্যার, অ্যাপ তৈরি করে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, আর এগুলোর মাধ্যমে কখনো সরাসরি, কখনো কৌশলে আবার কখনো প্রতারণার মাধ্যমে তথ্য চুরির কাজটি করা হচ্ছে। আর এই কাজটি করছে ইন্টারনেটভিত্তিক প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই। সুতরাং নিরাপদ ইন্টানেট ব্যবহার কতটা জরুরি সেটি আশা করি বুঝতেই পারছেন। সম্প্রতি দেশের অন্যতম শীর্ষ রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম পাঠাও পর্যন্ত তার অ্যাপসের মাধ্যমে ব্যবহার কারীদের সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করেছে। যা কিনা জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি স্বরুপ হয়ে দাড়িয়েছে। এদেশের সাধারণ মানুষ কেবলমাত্র ইন্টারনেটের বৈশিষ্ট্য দেখেই মুগ্ধ, ভেতরে কী চলছে তা জানার চেষ্টাটুকুও কেউ করেনা।

আরো পড়ুন- ডিপফেক প্রযুক্তি কি ও কিভাবে কাজ করে?

আপনি যখন কোন অ্যাপ ইন্সটল করেন তখন আপনার ব্যাক্তিগত তথ্যগুলো কী কী কাজে ব্যবহার করা হবে, তার বর্ণনা দেয়া থাকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নীতিমালায়। এই ব্যাখ্যার সঙ্গে একমত হলেই কেবল সেখানে ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ এবং অ্যাপটি ব্যবহার করা উচিত। আর এখানেই চলে আসে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার এর বিষয়টি। তবে বেশির ভাগ মানুষ/ব্যবহারকারী এই দীর্ঘ ও বিরক্তিকর নীতিমালা পড়েন না এবং না পড়েই অনুমতি দিয়ে দেন। ফলে ইন্টারনেট ভিত্তিক এ সকল প্রতিষ্ঠানগুলো খুব সহজেই আপনার মহা মূল্যবান ব্যাক্তিগত তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে পারে।

এই ছোটখাটো ব্যাপারগুলোতে সবার সাবধান হওয়া উচিত। বিশ্বাসযোগ্য ডেভেলপার হলে এক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেয়া যায়, কিন্তু আপনি যখন অপরিচিত কোনো ডেভেলপারের কোন অ্যাপ ব্যবহার করবেন তখন অবশ্যই এইসব ছোট ব্যাপারে দৃষ্টি বিবেন। তো যাই হোক ইন্টারনেটের নিরাপত্তা রক্ষার্থে বেশ কিছু ব্যাপারে সচেতন থাকলেই যথেষ্ট।

 

ব্রাউজার নির্বাচনে সতর্কতা- নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার

ইন্টারনেট ভিত্তিক তথ্য ও সেবা পাওয়ার জন্য যেহেতু ওয়েব ব্রাউজার অধিক ব্যবহার করা হয় তাই ওয়েব ব্রাউজার এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নিরাপদে ব্যবহার করা অতি জরুরী। কিন্তু কম্পিউটার এর অপারেটিং সিস্টেমের সাথে যে ওয়েব ব্রাউজার গতানুগতিক ভাবে দেয়া থাকে অথবা আমরা সে ওয়েব ব্রাউজােই ইনস্টল করি। সাধারণত তাতে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করা থাকে না। গুগল ক্রোম বা ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ব্রাউজারের পাশাপাশি আরও বহু ব্রাউজিং সফটওয়্যার পাওয়া যায়। সেগুলো দেখতে আকর্ষণীয় হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ওয়েব ব্রাউজার গুলোই আপনার সব তথ্য হাতিয়ে নেয়। তাই ব্রাউজার নির্বাচনের সময় সতর্ক হোন এবং নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার করুন।

 

ফ্রি প্লে-স্টোর অ্যাপ ব্যাবহারে সতর্কতা- 

অনেকেই প্লে-স্টোর থেকে ডাউনলোড করেন ফ্রি অ্যাপস। এই ধরণের অ্যাপগুলির ৯০ শতাংশই গুগলের সঙ্গে শেয়ার করে থাকে ইউজারদের তথ্য। যেটির জন্য অবশ্য নেওয়া হয় না ইউজারদের সম্মতি৷ যদিও বিষয়টিকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে গুগল। তথ্য শেয়ারিং কান্ডের সঙ্গে শুধুমাত্র গুগলই জড়িত নয়৷ ৪৩ শতাংশের মত অ্যাপ ফেসবুকের সঙ্গে তথ্য শেয়ার করে থাকে। বেশ কিছু অ্যাপস রয়েছে যেগুলি ট্যুইটার, আমাজন, মাইক্রোসফটের মত নামিদামি সংস্থাগুলির সঙ্গে ইউজারদের গোপন তথ্য শেয়ার করে থাকে। নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার এর ক্ষেত্রে এটি বিরাট একটি বাধা।

তথ্য চুরি ও শেয়ার করার ঘটনা প্রথম নয়। এর আগেও একইভাবে তথ্য চুরি হয়েছে৷ ইদানিং, সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে সামনে আসছে বিষয়টি। আর সেখান থেকেই নিজের তথ্য কতটা সুরক্ষিত সে বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত হচ্ছেন ইউজাররা। তাই, প্লে-স্টোর থেকে ফ্রী অ্যাপ ডাউনলোড করার আগে সর্তক থাকুন।

 

পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যাবহারে সতর্কতা

পাবলিক ওয়াইফাই সংযোগ ব্যবহারে অধিক সতর্ক হোন। আমরা অনেকেই এমন যে, কোথাও কোন পাবলিক ওয়াই-ফাই পেলেই সাথে সাথেই স্মার্টফোনকে সংযুক্ত করে ফেলি। এই বাজে অভ্যাসটি অতিসত্ত্বর পরিবর্তন করুন। আর যদি তা না করেন তাহলে এমন পাবলিক ওয়াই-ফাই থেকে হ্যাকিং বা ম্যালওয়্যার আক্রান্তের শিকার হতে পারেন আপনিও। সাইবার অপরাধীদের অনেকে ফ্রি এমন সংযোগের মাধ্যমে হ্যাকিং বা ভাইরাস ছাড়ানোর কাজটি করে থাকে। তাই অজানা কোনো ওয়াই-ফাই সংযোগের সঙ্গে ফোন যুক্ত করা উচিত নয়।

 

ফেসবুক থার্ড-পার্টি অ্যাপ ব্যাবহারে সতর্কতা

‘আপনি মেয়ে হলে দেখতে কেমন হতেন বা ৫০ বছর পর আপনাকে কেমন দেখাবে ?’ এ নামে প্রতিদিনই নতুন নতুন অ্যাপ প্রকাশ পায় ফেসবুকে। আমরা অনেকেই অ্যাপসটি নির্ভরযোগ্য নয় জেনেও নিকছ আনন্দের জন্য এ জাতীয় অ্যাপস এ প্রবেশ করি। শুধু প্রবেশই করিনা বরং তা টাইমলাইনে শেয়ার করে বন্ধু তালিকার সবাইকেও দেখার সুযোগ করে দেই। বন্ধু তালিকারও অনেকেই নিকছ আনন্দের জন্য অ্যাপটিতে প্রবেশ করেন। এসব অ্যাপ তৈরির একমাত্র উদ্দেশ্য হলো ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নেওয়া। আর তাই অ্যাপে বলা হয়, আপনি যত বেশি তথ্য সংযোজন করবেন, এই ভবিষ্যদ্বাণী তত বেশি নির্ভুল হবে। সেই আশাতে আমরা আরও তথ্য সংযোজনের চেষ্টা করে থাকি। যার মাধ্যমে এসব অ্যাপ হাতিয়ে নেয় আপনার মহা মূল্যবান ব্যাক্তিগত তথ্য। তাই এসব ফেসবুক অ্যাপে প্রবেশ থকে নিজেকে বিরত থাকুন।

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং

ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা বিপুল পরিমাণ তথ্য ছড়িয়ে দিই কিন্তু আমরা নিজেরা জানিও না আমাদের ব্যাক্তিগত তথ্য চুরি করার জন্য প্রতিনিয়তই চেষ্টা করে যাচ্ছে বহুজন। আর এ কারণেই প্রায়ই অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে। আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে হ্যাক হওয়া এসব তথ্য কী কাজে লাগবে ?

যুক্তি বিশ্লেষকেরা বলছেন, ফেসবুক থেকে হ্যাকড হওয়া তথ্য খুবই মূল্যবান। ফেসবুক হ্যাক করে তথ্য হাতিয়ে নিতে পারলে তা থেকে অর্থ আয় করে সাইবার দুর্বৃত্তরা। এসব তথ্য তারা ডার্ক ওয়েবে বিক্রি করে দেয়।

বিশেষ কিছু সফটওয়্যারের মাধ্যমে এ ধরনের ডার্ক ওয়েবে ঢুকে ওই তথ্য তারা কেনাবেচা করে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফেসবুক থেকে চুরি করা তথ্য কাজে লাগিয়ে পরিচয় প্রতারণা (আইডেনটিটি থেফট) বা ব্ল্যাকমেলের মতো ঘটনা ঘটাতে পারে দুর্বৃত্তরা।

ডার্ক ওয়েব বা বিটকয়েনের মতো ভার্চুয়াল মুদ্রায় বিক্রি হয় এসব অ্যাকাউন্টের তথ্য। এ সকল তথ্যের গুরুত্বের ওপর নির্ভর করে একেকটি অ্যাকাউন্ট বিক্রি হয় ৩ থেকে ১২ মার্কিন ডলার দামে। ফেসবুক থেকে যে পরিমাণ তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে তা এককভাবে বিক্রি করলে এর দাম হতে পারে ৬০ কোটি মার্কিন ডলারের কাছাকাছি।

যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান সনিকওয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিল কনার বলেন, ডার্ক ওয়েবে ব্যক্তিগত তথ্য খুবই মূল্যবান। কোনো প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এসব তথ্য নেওয়া হলে তা আরও গুরুত্বপূর্ণ।

যুক্তরাজ্যের মানি গুরু নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ভাষ্য, হ্যাকিংয়ের ঘটনার পর অনেক তথ্য ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যায়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব তথ্য কিনে তা বিজ্ঞাপন দেখানোর কাজে ব্যবহার করে থাকে।

Tags

You might Also Enjoy.....

আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

Read More

মধু খাওয়ার উপকারিতা ।

Read More
দলিল আছে রেকর্ড নাই

দলিল আছে রেকর্ড নাই ll করণীয় কি?

Read More

One response to “নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার”

  1. […] আরো পড়ুন- নিরাপদে কিভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করব… […]

Leave a Comment

Join Us

Recommended Posts

আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

মধু খাওয়ার উপকারিতা ।

দলিল আছে রেকর্ড নাই

দলিল আছে রেকর্ড নাই ll করণীয় কি?

ইউরোপের কোন দেশের ভিসা পাওয়া সহজ।

ইউরোপের কোন দেশের ভিসা পাওয়া সহজ

দলিলের খুটিনাটি

দলিল সম্পর্কে খুটিনাটি ll খতিয়ান কি

ইউরোপের কোন দেশে নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ

ইউরোপের কোন দেশে নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ

ইউরোপে যাওয়ার সহজ উপায়

ইউরোপ যাওয়ার সহজ উপায়

About this site

সাইটটি মূলত টেকনোলজি রিলেটেড। নিত্য নতুন টেকনোলজি সম্পর্কে এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। পাশাপাশি এসএএস পরীক্ষার জন্যও এখানে ম্যাটেরিয়ালস আপলোড করা হয়। সকল এসএএস পরীক্ষার্থীদের জন্য ভবিষ্যতে এই সাইটটি গূরুত্ত্বপূর্ণ সোর্স হতে চলেছে। পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল কিছুই এখানে পেয়ে যাবেন ইনশাল্লাহ।

Top Rated Posts

প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন

প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন

জমির খাজনা চেক

জমির খাজনা চেক

পড়া মনে রাখার উপায়

পড়া মনে রাখার উপায়

জমির মালিকানা বের করার উপায়

জমির মালিকানা বের করার ‍উপায়

Recommended Posts

গুরুদন্ড প্রদানের প্রক্রিয়া

গুরু দন্ড প্রদানের প্রক্রিয়া

লঘুদন্ড প্রদানের প্রক্রিয়া

লঘুদন্ড প্রদানের প্রক্রিয়া

গুগল বার্ড কি?

গুগল বার্ড কি? গুগল বার্ড এর আদ্যোপান্ত।

ডিপফেক প্রযুক্তি

ডিপফেক প্রযুক্তি: সেরা ১২ টি ডিপফেক অ্যাপস।