সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা ১৯৮৫ এর ৪ নং বিধি অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের দুই ধরনের দন্ড প্রদানের বিধান রয়েছে। যথা-
- লঘুদণ্ড ও
- গুরু দন্ড
যে সকল শাস্তি গুরুদন্ড হিসেবে বিবেচিত সেগুলো হলো-
- নিম্ন পদে অবনমিতকরণ।
- নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ।
- বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান।
- চাকুরি হইতে অপসারণ।
- চাকুরী হতে বরখাস্ত করুন।
গুরুদন্ড প্রদানের প্রক্রিয়া
সরকারি কোন কর্মচারী বা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আরোপ করা হলে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এরূপ অভিমত পোষণ করেন যে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে উক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে কঠোর শাস্তি/গুরুদন্ড প্রদান করা হইবে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিন্মলিখিত প্রক্রিয়া অবলম্বন করবেন।
১. অভিযুক্তকে লিখিতভাবে অবহিতকরণ
প্রথমে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তার সম্পর্কে আনিত অভিযোগসমূহ লিখিতভাবে জানাতে হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি অভিযোগনামা প্রাপ্তির ১০ কার্য দিবসের মধ্যে কৈফিয়ত/জবাব (তাহার উপর কেন প্রস্তাবিত দন্ড আরোপ করা হইবে না তাহার কারণ) প্রদান করিবেন এবং তিনি (অভিযুক্ত ব্যক্তি) ব্যাক্তিগতভাবে শুনানির ইচ্ছা পোষণ করেন কিনা সেটাও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্য অভিযোগনামায় নির্দেশনা থাকবে।
২. সময় বৃদ্ধির আবেদন
নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পূর্বে অভিযুক্ত ব্যক্তি সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত আরো ১০ কার্যদিবস সময় (লঘুদন্ডে ০৭ কর্মদিবস) প্রদান করিতে পারবেন। উল্লেখিত অতিরিক্ত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য দাখিল করেন অথবা ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ সকল বিষয়াদি বিবেচনা করবেন।
৪. অভিযোগ প্রত্যাহার
সকল বিষয় বিবেচনায় কর্তৃপক্ষ যদি এরূপ মনে করেন যে, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সূচিত্র কার্যধারাটি অগ্রসর হইবার মতো উপযুক্ত ভিত্তি নাই। সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি প্রত্যাহার করিবেন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবেন।
৫. শর্তহীনভাবে সকল অভিযোগ স্বীকার ও লঘুদণ্ড আরোপ
অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি শর্তহীনভাবে সকল অভিযোগ স্বীকার করেন এবং কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন যে অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় লঘুদণ্ড আরোপযোগ্য সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ লঘুদণ্ড আরোপ করবেন।
৬. সর্বোচ্চ লঘুদণ্ড আরোপযোগ্য
যদি কর্তৃপক্ষ মনে করে যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কার্যধারাটি অগ্রসর হইবার মতো পর্যাপ্ত ভিত্তি রহিয়াছে কিন্তু অভিযোগ প্রমাণিত হইলে সর্বোচ্চ লঘুদণ্ড আরোপযোগ্য সেক্ষেত্রে সংশ্লিপ্ত কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তকে ব্যক্তিগতভাবে শুনানির সুযোগ দিয়ে যেকোনো লঘুদন্ড প্রদান করিতে পারবেন।
৭. তদন্তব্য বোর্ড গঠন
যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনে করে যে, অভিযোগ প্রমাণিত হইলে গুরুদন্ড আরোপযোগ্য, সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ব্যক্তির পদমর্যাদার নিম্মে নয় এরূপ একজন তদন্ত কর্মকর্তা বা তিনজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি তদন্তব্য বোর্ড গঠন করিবেন
৮. তদন্ত কার্য আরাম্ভ
তদন্তের আদেশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে ৭ কার্য দিবসের মধ্যে বিধি মোতাবেক তদন্ত কাজ আরম্ভ ও পরিচালনা করিবেন এবং নির্ধারিত সময় শেষে কর্তৃপক্ষের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করিবেন।
৯. সুনিদৃষ্ট বিষয়ে পুন:তদন্ত
তদন্ত বোর্ডের প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর সিদ্ধান্তে উপনীত হইবার জন্য যদি কর্তৃপক্ষ কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে পুন:তদন্তের প্রয়োজন মনে করেন সেক্ষেত্রে একই তদন্তকারী কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ডকে সুনির্দিষ্ট বিষয়ে তদন্তের আদেশ দিতে পারবেন
১০. সিদ্ধান্ত গ্রহণ
তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ডের তদন্ত প্রতিবেদন বা পুনঃ তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর কর্তৃপক্ষ উহা বিবেচনা করবেন এবং সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করিবেন ও উক্ত সিদ্ধান্ত এবং তদন্ত প্রতিবেদন এর কপিসহ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অবহিত করবেন।
১১. দন্ড কেন আরোপ করা হইবে না
কর্তৃপক্ষ যদি তদন্ত প্রতিবেদন বিবেচনায় গুরু দণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, সেক্ষেত্রে প্রস্তাবিত দন্ড কেন অভিযুক্তের উপর আরোপ করা হইবে না সে সম্পর্কে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ৭ কর্ম দিবস সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করবেন।
১২. কমিশনের সাথে পরামর্শ
গুরু দণ্ড প্রদানের জন্য যে সকল ক্ষেত্রে কমিশনের সহিত পরামর্শ করা প্রয়োজন সে সকল ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যধারার সকল কাগজপত্র কমিশনের নিকট পরামর্শের জন্য প্রেরণ করিবেন।
১৩. বিভাগীয় কার্যধারা- কমিশনের সাথে পরামর্শ প্রয়োজন।
- যে ক্ষেত্রে কমিশনের সহিত পরামর্শের প্রয়োজন নাই সে ক্ষেত্রে, অভিযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক কারণ দর্শানো হইলে উহা বিবেচনার পর এবং
আরো জানুন- লঘুদন্ড প্রদানের প্রক্রিয়া।
- যে ক্ষেত্রে কমিশনের সহিত পরামর্শের প্রয়োজন আছে সেই ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক কারণ দর্শানো হইলে উহা এবং কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত পরামর্শ বিবেচনার পর কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন এবং অভিযুক্তকে তা অবহিত করবেন।
মনে রাখার জন্য- sjkjrbhrakjjf (skr)
Leave a Comment