ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন করা এখন খুবই সহজ। আপনি চাইল এখন ঘরে বসেই ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন এর কাজটি করে ফেলতে পারবেন। কিভাবে সেটা? তো চলুন কথা না বাড়িয়ে কাজ শুরু করা যাক।
আরা পড়ুন: অনলাইন ই পাসপোর্ট চেক।
পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পূর্ববর্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন । ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন কিভাবে হয় এবং কিভাবে পুলিশ পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করবেন সেই বিষয়ে সম্পূর্ণ ধারনা দেয়ার চেষ্টা করবো। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার ইনভেস্টিগেশন করে পজিটিভ ক্লিয়ারেন্স রিপোর্ট দেওয়ার পড়ে আপনার ই পাসপোর্ট তৈরির বাকি কাজ শুরু হবে। এবং ইনভেস্টিগেশন এর রিপোর্ট যদি নেগেটিভ আসে সেক্ষেত্রে আপনার পাসপোর্ট যাত্রা এখানেই সমাপ্ত।
ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন
ই পাসপোর্ট তৈরির অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন। তাই আমাদের পুলিশই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জানা দরকার। আপনি যদি ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করে থাকেন তাহলে দ্রুত আপনাকে ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হবে। নিচে ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
পুলিশ ভেরিফিকেশন কি?
পুলিশ ভেরিফিকেশন এর মাধ্যমে একজন নাগরিকের প্রদত্ত সকল তথ্য গুলো যাচাই-বাছাই করা হয়। আপনি যদি ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেন সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রদানকৃত সকল তথ্য পুলিশ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হবে। ই পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
আরো পড়ুন: ই পাসপোর্ট করার নিয়ম।
ই পাসপোর্ট অফিসে প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিক কিনা সেটা যাচাই এর জন্য নির্দিষ্ট একজন পুলিশ অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। এবং উক্ত পুলিশ অফিসার আপনার এলাকায় গিয়ে আপনার প্রদত্ত সকল তথ্য যাচাই-বাছাই করবে, অথবা ফোন কলের মাধ্যমে যাচাই বাছাই করতে পারে। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার এর উপরে।
ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন
পুলিশ ভেরিফিকেশনে যদি ইনভেস্টিগেশন ক্লিয়ারেন্স রিপোর্ট পজিটিভ আসে সেক্ষেত্রে আপনাকে ই পাসপোর্ট প্রদান করা হবে। অন্যথায় নেগেটিভ রিপোর্ট আসলে আপনার ই পাসপোর্ট এর আবেদন ক্যান্সেল করে দেওয়া হবে।
ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন এ কি কি চেক করা হয়?
ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করার পরে ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন হল একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। অনেকে জানতে চান ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন এ কি কি চেক করা হয়। সাধারণত পুলিশ ভেরিফিকেশনে আপনি আবেদনের সময় যেই সকল তথ্য দিয়েছিলেন তার সত্যতা যাচাই করা হয়। নির্দিষ্ট কোন পুলিশ অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়ার পরে উনি আপনার এলাকায় এসে সকল তথ্য যাচাই করবে। এরপরে একটি ইনভেস্টিগেশন ক্লিয়ারেন্স রিপোর্ট জমা দিবে।
সাধারণত ই-পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন এর জন্য যে সকল তথ্য গুলো চেক করা হয়ঃ
- ব্যক্তির নাম ও ঠিকানা এবং জাতীয়তা।
- ব্যক্তির পিতার নাম ও ঠিকানা এবং জাতীয়তা।
- ব্যক্তির জন্ম তারিখ ভোটার আইডি কার্ড/ জন্ম নিবন্ধন/ স্কুল সার্টিফিকেট অনুযায়ী।
- ব্যক্তির স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা। (আপনি যদি স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা আলাদা আলাদা ভাবে দেন সেক্ষেত্রে দুই
- জায়গায় আলাদাভাবে পুলিশ ভেরিফিকেশন হতে পারে)
- পাসপোর্টধারীর বাড়ির দলিল এর কপি/ গ্যাস বিল/ বিদ্যুৎ বিল/ টেলিফোন বিল ইত্যাদি।
- ব্যক্তির বৈবাহিক অবস্থান।
- বিগত ৫ বছর পাসপোর্টেধারী কোন ঠিকানায় অবস্থান করছিলেন এবং কি কাজ করতেন।
- পূর্বে যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা অন্য কোন পেশারয় নিয়োজিত ছিলেন তার তথ্য (প্রয়োজন হতে পারে)
- যদি কোনো সরকারি কিংবা আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকে বা পূর্বে কর্মরত ছিলেন সেই সকল প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য সকল তথ্য।
- ব্যক্তি কোন ধরনের কোটাধারী কি না।
- কোন মুক্তিযোদ্ধা ছেলে/ নাতি কি না।
- ব্যক্তির কোন ধরনের শারীরিক অক্ষমতা আছে কিনা।
- ব্যক্তি পূর্বে কোন ধরনের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন এরকম কোন রেকর্ড আছে কিনা।
- ব্যক্তি রাজনৈতিক/ ফৌজদারি মামলার আসামি কিনা।
- ব্যক্তির নামে কোনো ধরনের আইনি বা দেশদ্রোহী অভিযোগ আছে কিনা।
- ব্যক্তি কোন ধরনের নাশকতামূলক ও রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যকলাপের সাথে যুক্ত আছে কিনা।
- ব্যক্তি চারিত্রিক ও সামাজিক অবস্থান কেমন।
- পাসপোর্টধারী পূর্বে কোন সরকারি চাকরি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছে কিনা।
- পাসপোর্টধারী ব্যক্তির নিকটস্থ কোনো আত্মীয়-স্বজন (বাবা-মা, চাচা-চাচি, খালা-খালু, মামা-মামি, ফুফা-ফুফু ) কোন সরকারি চাকরির সাথে জড়িত আছে কিনা।
সাধারণত পুলিশ ভেরিফিকেশনে এই সকল তথ্য গুলো চেক করা হয়। এক কথায় বলতে গেলে আপনি আবেদনের সময় যে তথ্যগুলো প্রদান করেছেন তার সত্যতা যাচাই করা হবে।
ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে কত টাকা লাগে?
আচ্ছা ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে কত টাকা লাগে? এটা খুবই কমন একটি প্রশ্ন। সাধারণত পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করার পরে পুলিশ ভেরিফিকেশন চেক করতে কোন ধরনের টাকার প্রয়োজন হয় না এবং আপনি ঘরে বসেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সংগ্রহ করে তারপর পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে দ্রুত আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হয়ে যাবে।
ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন
অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ নিতে ট্রেজারি চালান অথবা অনলাইনে ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে ৫০০/- টাকা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ফি প্রদান করতে হবে। আপনার নিকটস্থ বাংলাদেশ ব্যাংক/ সোনালী ব্যাংক এর যেকোন শাখা থেকে (১-৭৩০১-০০০১-২৬৮১) এই কোড বরাবর ৫০০ (পাচশত) টাকা মূল্যমানের ট্রেজারি চালান করতে হবে। ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন বা শুধু পাসপোর্ট চেক (ই পাসপোর্ট নয় যেটি) করতে কোন ধরনের টাকার প্রয়োজন হয় না। ভেরিফিকেশন এ আসা অফিসারকে যদি আপনি খুশি হয়ে কিছু টাকা দিতে টান বা হাদিয়া প্রদান করেন সেটা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য আসলে নির্ধারিত কোন ফি নেই এটা সম্পূর্ণ ফ্রি।
পাসপোর্ট নবায়নে পুলিশ ভেরিফিকেশন
ই পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে পাসপোর্ট নবায়নে পুলিশ ভেরিফিকেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেকেই এমনটা মনে করেন যে, পাসপোর্ট নবায়নের সময় পুনরায় পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হয়। এটা সম্পূর্ণ ভুল একটি তথ্য। পাসপোর্ট নবায়ন এর জন্য কোন ধরনের পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হয় না। নতুন পাসপোর্ট করার সময় শুধুমাত্র পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হয় পরবর্তীতে নবায়নের ক্ষেত্রে কোন ধরনের পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রয়োজন হয় না। তবে পাসপোর্টকৃত ব্যক্তির নামে যদি পাসপোর্ট থাকা অবস্থায় কোন ধরনের রাজনৈতিক বা ফৌজদারি মামলা হয় সেক্ষেত্রে পাসপোর্ট না হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কিন্তু আপনার নামে যদি কোন ধরনের মামলা না থাকে তাহলে পাসপোর্ট নবায়ন করতে কোন ধরনের পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রয়োজন নেই।
পুলিশ ভেরিফিকেশনের কতদিন পর পাসপোর্ট পাওয়া যায়?
পুলিশ ভেরিফিকেশনের কতদিন পরে পাসপোর্ট পাওয়া যাবে এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে ভেরিফিকেশন এর দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার উপরে। সে যত দ্রুত ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট জমা দেবে ততো দ্রুত পাসপোর্ট পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকবে। তবে বর্তমানের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পাবেন। এবং ইন্ডিয়ার ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে স্পোর্ট হাতে পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকবে।
Leave a Comment